October 23, 2024, 8:49 pm
বিশেষ প্রতিনিধি গোলাম রাব্বানীঃ বরগুনার সদর থানাধীন সাবেক ইউপি সদস্য নাসিরগনদের জোরপূর্বক জমি দখল, থানায় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ও শারীরিক এবং মানসিকভাবে নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে গরীব কৃষক মোতালেব সিকদারের আত্মহত্যা অভিযোগ পাওয়া গেছে ।
অনুসন্ধানের জানা গেছে, বরগুনার সদর থানাধীন ৯ নং এম বালীয়াতলী ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মোহাম্মদ নাসির মোল্লার ও তার বাহিনী দিয়ে এক দরিদ্র কৃষকের সম্পত্তি জোরপূর্বক আত্মসাতের অপকৌশলের বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের কারণে শুধু কৃষকের আত্মহত্যায় না আজও মৃত মোতালেব সিকদারের পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন ভাবে হুমকির সম্মুখিন হতে হচ্ছে ।
এ ব্যাপারে মৃত মোতালেব সিকদারের ছেলে মো.নজরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদকে বলেন, আমার বাবা একজন সহজ সরল খেটে খাওয়া গ্রামের সাধারণ কৃষক ছিলেন। বর্তমানে আমিও কৃষি কাজ করি । তিনি জানান, আমার বাবা নাসির মোল্লার গনদের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে চলতি বছরের ১০ জুলাই মৃত্যুর বরন করেন । আমার বাবা সাথে আমারই খালাতো বোন জামাই সাবেক ইউপি সদস্য নাসির মোল্লার কথা অনুসারে কিছু টাকার আর্থিক লেনদেন ছিল। নাসির তা কোন বাস্তব প্রমাণ দেখাতে পারেনি। এমনকি সে প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে । বাবা মারা যাওয়ার প্রায় দুই মাস আগে নাসির মোল্লার তার বাড়ীতে দাওয়াত দেয় ।
ওই দিন দাওয়াতে যাওয়ার পূর্বে আমার বাবা মাকে বলেছিল নাসির ওর বাড়ীতে দাওয়াতের সময়ের আগেই যেতে বলে । তখন মা বলল হয়তো সাংসারিক কোন কাজ করাতে পারে । যাক ভালই হবে কিছু টাকা পাওয়া যাবে। আমার বাবা ওইদিনের দাওয়াত ছিল জীবনের শেষ খাবারের নিমন্রন । আমি ওই সময় কাজে সন্ধ্যানে ঢাকায় ছিলাম ।
পরে আমি বাড়ীতে এসে মা’র কাছে বাবার উপর নির্যাতনের সম্পর্কে সব কিছু জানতে পারি । ঐ দিন দুপুরে বাবাকে নাসির তার গোয়াল ঘরে গরুর মধ্যে বাঁধে গরুর সিং এর সাথে যুক্ত হতে পারে কিন্তু বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেন বাবা মায়ের কাছে গরুর সিং এর আঘাত করতে থাকে এক পর্যায়ে তারা মাগরিব এর নামাজের পড়ে নাসির সাদা এস্টাম্পে জোর পূর্বক ভাবে স্বাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা করে । এতে সে ব্যার্থ হয়ে তার বাহিনীদের দিয়ে আমার বাবাকে মারধর করে ।
এবার বাবাকে বলে পুকুরে নামতে শরীর ব্যথা নিয়ে রাত নয়টার সময় থেকে প্রায় এগারোটা বাজে সারা পুকুরে সাঁতার কাটতে কাটতে বলে তোমার বৌয়ের জমির পরিমাণ অর্থ দিয়ে দেই আমাকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর দেন।বাবা ভয়ে ভীত হয়ে যায় তখন বলে তুমি আমাকে ছেড়ে দাও আমি তোমাদের কাছে এসে আমার বৌকে সব শিখিয়ে দিব কোন কোন জায়গায় সাইন করতে হবে জমির দলিল তোমার খালা শাশুড়ি র নামে তাই তাকে বোঝাতে পারবো এই কথা বলতেই নাসির বলে মনে হয় আমার কথা মত কাজ করবেন বলে পুকুর থেকে উঠে আসেন এবং বাড়ি যান দুই দিনের মধ্যে দলিল দিবেন আর জমির পরিমাণ অর্থ কি আমি দিয়ে দিব। নাসির আরও বলেন আমরা শাশুড়ি আর আপনার বউএর জমি একসাথে যুক্ত আছে আমি ঐ জায়গায় ফার্মের মতো একটা কিছু করব।বাবা পুকুর থেকে উঠে এসে কোনো মতে একটা রিকশা নিয়ে বাড়ি আসে বাড়িতে রিকশা চালক বাবাকে নামানোর সময় মাকে বললেন ওনাকে ধরে ধরে নিয়ে যান খুব মারধর করা হয়েছে। বাবা তাদের ভয়ে নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন ।
আত্মহত্যা করার দিন উপস্থিত সাংবাদিকদের ও পুলিশের কাছে উক্ত ঘটনার বর্ণনা করি পুলিশের সহযোগিতায় তো পাই নাই বরং এখন নাকি নাসির আমার নামে থানায় একটি অভিযোগ করেন। আমারা যেন বাবার নির্যাতন হওয়ার কথা কোথাও প্রকাশ করার মতো জায়গা থাকে না।বাবা মারা যাওয়ার পরও নাসির আমাদের বাড়িতে এসে হুমকি দেয় জমি লিখে না দিলে সবাইকে মেরে ফেলবো ।
পুলিশ আমার মুঠোই । তোরা আমার কিছুই করতে পারবি না । তবে এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগে জানা গেছে, নাসির মোল্লার ইউপি সদস্য থাকা কালীন তার বিরুদ্ধে অনেক দুর্নীতি , অনিয়ম ও গরিবদের উপর অত্যাচার নির্যাতন চালাত। নজরুলের কথায় নাসিরের করা অভিযোগে সংশ্লিষ্ট থানার এসআই মোঃ সাহাবুদ্দিন বলে নাসির মোল্লা তোমার নামে বিভিন্ন মামলা দায়ের ও মে কোন সমস্যা করতে পারে ভাল হয় যদি তোমার মায়ের জমি ওকে লিখে দিও।
উপপরিদর্শক ( এস আই ) মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নাসির পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন । পরে পুলিশ সুপার ওই অভিযোগটি তদন্তের জন্য থানায় পাঠানো হয় । পরে ওসি স্যার আমাকে তদন্ত করতে দেন । পরে আমি তদন্ত করতে গিয়ে দেখি তারা নিজেদের মধ্যে সমস্যা তখন দুই পক্ষকে বলি আপনারা নিজেরাই বসে মিমাংসা করেন। তার পরও তারা মিমাংসা করেনি ।
আত্মহত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বলা হয়েছে গত ১০/১২/২০২৩ই মৃত ব্যক্তির বউ,ছেলে, ছেলের বউ, নিরিহ কৃষক মোতালেব সিকদারের মৃত্যুরহস্য উদঘাটনে তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও বাস্তবায়ন সংস্থা পরিচালক বরাবর অভিযোগ করেছেন। এবং উক্ত ঘটনাটা সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সংবাদ আকারে প্রকাশ করার অনুরোধ জানান অসহায় পরিবারের সদস্যরা।